ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

লবনের দাম নিয়ে শংকিত কুতুবদিয়ার চাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুতুবদিয়া :: কুতুবদিয়ায় ২০২১-২২ অর্থ বছরে নতুন লবণের দেখা মিলেছে মাঠে। উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের চরধুরুং ও লেমশীখালীতে বেশ কিছু মাঠে চাষিরা লবণ তুলছে। যদিও উপজেলায় অর্ধেক জমি তৈরির কাজ চলছে। এবার অক্টোবরের মাঝ সময়ে চাষিরা মাঠে নেমেছে। গত বছর ঘুর্ণিঝড় বুলবুলির প্রভাবে শুরুতে মাঠ তৈরিতে হোচঁট খেয়েছিল চাষিরা।

লবণ উৎপাদনে পরিমাপ হয়না অন্তত ১০ বছর যাবত। ফলে চলতি বছর লবন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। তবে স্থানীয় বিসিক ও বিভিন্ন তথ্য মতে উপজেলার ৬ ইউনিয়নে ৬ হাজার একর একর জমিতে লবণ চাষ হতে পারে। এ ছাড়া লেমশীখালীতে লবণ প্রদর্শনী কেন্দ্রে (বিসিক) রয়েছে ৭৯ একর লবন মাঠ।
অনেক মাঠে লাগিয়ত মূল্য কম হলেও উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় গত ৪ বছর ধরে লবনের কাংখিত দাম পাচ্ছেনা চাষিরা। যে কারণে অনেক মাঠে চাষিরা এবার চাষ করছেনা।

পতিত রয়েছে মাঠ। যার পরিমাণ অন্তত ৯৮০ একর। উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে পূর্ব চর ধুরুং লবন মাঠের চাষি নয়াকাটা গ্রামের জাফর আলম, সুলতান আহমদ বলেন, লবনের দাম কম থাকায় অনেক জমি পতিত (খিলা) রয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে লবন উঠছে। খরচ বেশি। এক একর জমি ২৫ হাজার টাকা, ৬ মাসের জন্য একজন শ্রমিক এক লক্ষ টাকা, পলিথিন ১৭ হাজার ৫০০ টাকা, পানি, খাল ইত্যাদি খরচ তো আছেই। উৎপাদন ভাল হলে একরে ৭০০ মন হতে পারে।

একই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য লবন ব্যবসায়ি মোহাম্মদ আলী চকরিয়া নিউজকে বলেন, বাঁকখালী,তেলিয়াকাটা সহ ৩ মাঠে তিনি অন্তত ৭৫ একর (৩০ কাণি) লবন চাষ করছেন। ৬ মাসের জন্য নিয়োগকৃত শ্রমিকের মূল্য ৯৫ হাজার থেকে এক লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। পর্যাপ্ত লবন উৎপাদন হলেও দাম না পাওয়ায় তার নিজের জমিও পতিত রয়েছে কয়েক একর।
অপর দিকে লবনের দাম বৃদ্ধির আশায় অনেকেই মাঠে কয়েক বছরের লবন জমা রেখেছেন। তবে শেষ মুহুর্তে দাম কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে পুরাতন লবন প্রতিমণ ২২০-২৩০ টাকা। নতুন লবন কিছুটা নরম হওয়ায় দাম কম থাকে। প্রতিমণ ১৫০ টাকা হতে পারে। অধিকাংশ লবন চাষের জমি লবন ব্যবসায়িদের দখলে। উপজেলায় অন্তত ২০০ লবন ব্যবসায়ি রয়েছেন। যারা চাষিদের লবন বেচেঁই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।
তারা উচ্চ দামে চাষিদের কাছে উৎপাদিত লবন দেবে এমন চুক্তির মাধ্যমে লাগিয়ত দিয়ে থাকে। প্রতি একর লবন জমি একসনা ৭৫-৮৫ হাজার টাকা।
কৈয়ারবিলের শফি আলম জানান, দীর্ঘ দিন যাবত লবনের দাম নেই। আবার বিদেশ থেকে লবন আমদানির পায়তারাও করেন একটি সিন্ডিকেট। বিদেশ থেকে লবন আমদানির গুজবেও লবন ব্যবসায়িরা মাঠ পর্যায়ে দাম কমিয়ে দেন। কষ্ট করে উৎপাদিত লবন ন্যায্য দামে বিক্রি করতে না পারলে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হন বলে তারা মনে করেন।
স্থানীয় বিসিকের সহকারি পরিদর্শক হাফেজ জাকের হোছাইন চকরিয়া নিউজকে বলেন,নতুন অর্থ বছরে লবন উৎপাদনে এখনো উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রিত হয়নি। আগাম মাঠ তৈরি করায় কিছু মাঠে লবন ওঠা শুরু হয়েছে। তাদের বিসিক মাঠে ৭৯ একর লবন জমি প্রান্তিক চাষিদের মাঝে লটারির মাধ্যমে একসনা বরাদ্ধ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

পাঠকের মতামত: